শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৫৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নজরদিন :এবার টেকনেশিয়ান দিয়ে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চলছে চিকিৎসা সেবা গোয়ালন্দে ডিবির অভিযানে ইয়াবা সহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার দৌলতদিয়ায় হেরোইনসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার পাংশায় সরকারি জমি থেকে অর্ধশত গাঁজার গাছ উদ্ধার রাজবাড়ীতে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় ১২জনের বিরুদ্ধে মামলা ॥ ২জন গ্রেপ্তার দুই লাখ ত্রিশ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট চূড়ান্ত রাজবাড়ীর প্রতিটি থানা, ফাঁড়ি ও সার্কেল অফিস হবে জনগণের সেবাকেন্দ্র : নবাগত পুলিশ সুপার রাজবাড়ীতে ভ্যান চালক হত্যাকারীদের বিচার দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ : আইওকে মারপিট রাজবাড়ীতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন অবহিতকরণ ও বাস্তবায়ন বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত গোয়ালন্দ ভিকটর ফিডস-ভিকটর ব্রীডার্স ও ভিকটর ভিলেজে মানসম্মত মুরগীর বাচ্চা তৈরি

গোয়ালন্দ ভিকটর ফিডস-ভিকটর ব্রীডার্স ও ভিকটর ভিলেজে মানসম্মত মুরগীর বাচ্চা তৈরি

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫
  • ৪৬৫ বার

স্টাফ রিপোর্টার : পোল্ট্রি খাতে বিশেষ ভুমিকা রাখছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা। গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে যার সুনাম ধরে রেখেছে এ উপজেলার হ্যাচারিচ ও খামারীরা। সারাদেশে চাহিদার অর্ধেক সোনালী মুরগির বাচ্চা সরবরাহ করা হয় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ থেকে। হ্যাচারি শিল্পের মালিকেরা জানান, কাচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় লোকসানে পড়তে হচ্ছে তাদের, আর জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা জানান, প্রাণিজ সম্পদ বৃদ্ধি করে চাহিদা মেটানো ও কর্মসংস্থান তৈরিতে গোয়ালন্দ উপজেলা রাখছে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা। বায়োসিকিউরিটির ব্যাপারে করা হচ্ছে তদারকি।
জানাগেছে, সারাদেশের মাংস ও ডিমের যোগান দিতে ও এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানের লক্ষ্য নিয়ে ২০০৩ সালে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার জমিদার ব্রীজ এলাকায় ভিকটর ফিডস ও ভিকটর ব্রীডার্স লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন ব্যবসায়ী রুহুল আমীন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পোল্টিখাতে বিশেষ ভুমিকা রাখছে প্রতিষ্ঠানটি। নিজস্ব খামারের ডিম থেকে প্রতি সপ্তাহে অন্তত এক লক্ষ মুরগির বাচ্চা তৈরি হচ্ছে এখানে। যা পাঠানো হচ্ছে সারাদেশের খামারীদের কাছে।
জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্যমতে, রাজবাড়ী জেলায় ব্রয়লার মুরগির খামার রয়েছে ৮৬৫ টি, লেয়ার মুরগির খামার রয়েছে ৫৩৮ টি, সোনালী মুরগীর খামার রয়েছে ৬০৩ টি ও হ্যাচারি রয়েছে ২৯ টি যার ২২ টি হ্যাচারি গোয়ালন্দ উপজেলায়।
ভিকটর ফিডস ও ভিকটর ব্রীডার্স লিমিটেড কার্যালয় সুত্রে জানাযায়, প্রথমে ভিকটর ফিডস ও ভিকটর ব্রীডার্স লিমিটেড দিয়ে শুরু করা হলেও এখন গড়ে তোলা হয়েছে ভিকটর ভিলেজ নামে বিশাল একটি হ্যাচারি ও খামার। যেখানে বায়োসিকিউরিটি মেনে, প্রাকৃতিক পরিবেশে লালন পালন করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির ব্রয়লার, সোনালী মুরগী। নিজস্ব খামারের বাছাইকৃত ডিম থেকে তৈরি হচ্ছে সোনালী মুরগীর বাচ্চা। প্রতি সপ্তাহে প্রায় এক লক্ষ মুরগীর বাচ্চা তৈরি হচ্ছে এখানে। যা সারা দেশের খামার পরিচালনায় ভুমিকা রাখছে।
শুধু ভিকটর ফিডস নয় ! রয়েছে “গোয়ালন্দ হ্যাচারিজ” “উইনার”সহ আরো ২২ টি ছোট বড় হ্যাচারি রয়েছে রাজবাড়ী গোয়ালন্দ উপজেলায়। যেখান থেকে তৈরি হচ্ছে লাখ লাখ মুরগির বাচ্চা। খামারগুলোতে তৈরি হচ্ছে লাখ লাখ বিভিন্ন প্রজাতির ব্রয়লার-লেয়ার ও সোনালী মুরগি। এ সকল প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় তৈরি হয়েছে কর্মসংস্থান। এলাকায় কমেছে বেকারত্ন।
এ সময় খামারে কর্মরত নারী শ্রমিক আলেয়া বেগম বলেন, জমিদার ব্রীজ এলাকায় ভিকটর ফিডস গড়ে উঠার কারণে এই এলাকায় শতাধিক অবহেলিত নারী শ্রমিক কাজ করে খেতে পারছে। আমরা নারীরা এখানে কাজ করে যে পারিশ্রমিক পাই তা দিয়ে সংসারে স্বামী সহযোগিতা ও সন্তানদের পড়াশোর কাজে যোগান দেই।
ভিকটর ভিলেজের সুপার ভাইজার মোঃ ইদ্রিস আলী বলেন, ভিকটর ভিলেজ গড়ে ওঠার কারণে এখানে প্রায় দুই শত শ্রমিকের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। এ শ্রমিকেরা খামার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, পানি দেওয়া, মুরগির খাবার দেওয়ার কাজ করে। আমরা সব ধরনের নিয়ম মেনে খামার পরিচালনা করি। মালিকের নির্দেশ দুই টাকা কম কামাই করবো কিন্তুু সুনাম ধরে রাখা আমাদের লক্ষ্য।
ভিকটর ফিডস ও ভিকটর ব্রীডার্সের হ্যাচারি ইনচার্জ মোঃ রেজাউল শেখ বলেন, আমাদের খামার থেকে আসা ডিম প্রথমে বাছাই করা হয়। পরে হ্যাচে দিয়ে বাচ্চা ফুটানো হয়। আমাদের এখানকার বাচ্চা মান সম্মত হওয়ায় সারা দেশে আমাদের সুনাম রয়েছে। যে কারণে আমাদের সোনালী মুরগীর বাচ্চার চাহিদা বাড়ছে।
ভিকটর ফিডস ও ভিকটর ব্রীডার্সের জেনারেল ম্যানেজার ওবায়দুর রহমান বলেন, ভিকটরে বর্তমানে তিন ধরনের বাচ্চা তৈরি করা হয়। প্রতি সপ্তাহে দুই বার অন্তত এক লক্ষ্য বাচ্চা উৎপাদন হয়। এখানে ৪০ হাজার মুরগি ডিম দিচ্ছে আরো ৩০ হাজার দুই সপ্তাহ পর থেকে ডিম দেওয়া শুরু করবে।
তিনি আরো বলেন, এ শিল্পকে ধরে রাখতে ও কর্মসংস্থান তৈরি করতে তাদের এ উদ্যোগ। কিন্তুু যেভাবে কাচামালের দাম বাড়ছে বেশিদিন হয়তো এ শিল্প টিকিয়ে রাখাই হবে কষ্ট কর।
তার দাবি চাহিদার তুলনা উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় কমেছে মুরগির বাচ্চার দাম। বর্তমানে প্রতিটি বাচ্চার উৎপাদন খরচ পড়ছে ২৭ টাকা আর বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা করে। তাই সরকারীভাবে মুরগির বাচ্চা দাম নির্ধারণ করা প্রয়োজন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা প্রকাশ রঞ্জন বিশ^াস বলেন, প্রাণিজ সম্পদ বৃদ্ধি করে চাহিদা মেটানো ও কর্মসংস্থান তৈরিতে গোয়ালন্দ উপজেলা রাখছে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা। খামার ও হ্যাচারিচের বায়োসিকিউরিটি বজায় রাখতে সব সময় নজরদারি করা হচ্ছে। এতে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যোক্তা। এছাড়াও ডিম, মাংস ও মুরগীর বাচ্চা উৎপাৎদনের গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা রাখছে এই জেলার খামারীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2025 RajbariProtidin.com
Theme Customized By BreakingNews